অবশেষে কক্সবাজার থেকে ফেনীতে বদলি হওয়া পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) আসামী উপ-পরিদর্শক (এসআই) লাভলী ফেরদৌসিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য বলে প্রমাণিত হওয়ায় তার শাস্তি হওয়া উচিত ছিল বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
পিবিআই ফেনী জেলা সুপার (এসপি) আসাদুজ্জামান জাগো নিউজকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
জড়িতদের মতে, এসআই লাভলী ফেরদৌসীর বিয়ে হয়েছিল কক্সবাজারের রামুর দক্ষিণে কাইমারঘোনা এলাকার বেলাল আহমেদের ছেলে সুদর্শন শাহজাহানের সঙ্গে। তিনি প্রথম ঘরের দুই সন্তানের এবং পরের বাড়ির এক সন্তানের সংসারের টান টানতে শুরু করেন। উপরন্তু, যেহেতু তার দ্বিতীয় স্বামী বেকার, তাকে তার বিল পরিশোধ করতে হবে। ফলস্বরূপ, এসআই লাভলি তার পরিবারের আর্থিক চাহিদা মেটাতে অক্ষম হন এবং পুলিশের বিরুদ্ধে কাজ শুরু করেন।
অনিয়ম ও দুর্নীতির অন্তর্ভুক্তি। বিশেষ করে, তার নাম মামলাটির তদন্তের জন্য তার স্বামীর নেওয়া, তার স্বামীর আয়ের অপব্যবহার, ফৌজদারি রেকর্ডের অপব্যবহার, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং তহবিলের অপব্যবহার সহ বেশ কয়েকটি মামলার সাথে যুক্ত হয়েছে।
সম্প্রতি, তদন্তকারী প্রতিবেদন প্রদানের জন্য অভিযোগকারীর একটি ভয়ঙ্কর বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছিল। যেখানে এসআই লাভলী ফেরদৌসী এবং তার স্বামী শাহজাহান ঘুষ হিসেবে দানকৃত অর্থের পরিমাণ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে কথাটি ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্নভাবে রিপোর্ট ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এটি পিবিআইয়ের অফিসিয়াল অবস্থানের জন্য অবমাননার ঝড় তৈরি করেছিল।
একইভাবে, পুলিশের জন্য তথাকথিত এলিট ফোর্সের এই শাখার সুনামও কলঙ্কিত হয়েছিল। পিবিআই কর্মকর্তারা নীরব ছিলেন।
বিষয়টি তদন্তের জন্য ডিআইজির অতিরিক্ত দায়িত্ব নিয়ে একজন পুলিশ কর্মকর্তার নির্দেশে কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি প্রায় এক সপ্তাহ কক্সবাজারে বসে তাদের দাবি বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদন দেয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসআই লাভলী ফেরদৌসির বিরুদ্ধে অভিযোগ নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রতিবেদনে পুলিশ আইন অনুযায়ী তাদের শাস্তি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। কমিটি গ্রহণের জন্য এসআই লাভলিকে সাময়িকভাবে ক্ষমা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ভুক্তভোগী বলেন, পুলিশ সুযোগটি কাজে লাগাতে পারে। তিনি একজন ভালো মানুষ তা ভাবার কোন কারণ নেই। কিন্তু লাভলী ফেরদৌসীর ঘটনা ছিল পুলিশের উল্টো। লোকটির সাথে মামলার তদন্ত, লোকটিকে পুলিশ পরিচয় দেওয়া সমর্থন করা উচিত নয়।
পিবিআই মুখপাত্র, যার নাম প্রকাশ করা হয়নি, তিনি বলেন, মামলাটি আমাদের কাছে "অপমানজনক" এবং পিবিআইয়ের নামে প্রতারণা করেছে। কক্সবাজার পিবিআই -এর সুনাম কলঙ্কিত হয়েছে তার মামলায়। লাভলী তদন্ত কমিটিতেও স্বীকার করেছেন যে "তারা তাদের স্বামীদের সাথে মামলাটি তদন্ত করেছে এবং তদন্তের জন্য তাকে নিয়ে গেছে।" কর্মী পুলিশের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলায় অংশ নিয়েছিলেন, মূলত তাদের স্বামীর লোভের কারণে।
তদন্ত কমিটির প্রধান নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পিবিআই কর্মকর্তারা প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে তাদের স্বামীদের দ্বারা মামলাটি তদন্ত করছে শুনে হতবাক ও হতবাক। এটাই তাকে বড় বিপদে ফেলেছে। এসআই লাভলী ফেরদৌসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তাকে অনুরোধ করা হয়েছিল কারণ তার বিরুদ্ধে বেশিরভাগ অভিযোগ সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছিল।
পিবিআই সুপারিন্টেন্ডেন্ট অব স্টেট (এসপি) আসাদুজ্জামান বলেন, এসআই লাভলী ফেরদৌসি সম্প্রতি কক্সবাজার থেকে পিবিআই ফেনী জেলায় যোগদান করেছেন। কাজ শুরু করার সাথে সাথেই তাকে কিছুক্ষণের জন্য চলে যেতে বলা হয়। আমি শুনেছি মিথ্যা অভিযোগে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পর তাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।